
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৪৩ জন নতুন রোগী।
স্বাস্থ্য ডেক্স:
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬০টি জেলাতেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, জয়পুরহাট এবং সুনামগঞ্জ এই চারটি জেলায় এখন পর্যন্ত কোনো ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। তবে, ডেঙ্গু সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি দেশের ১০টি জেলায়, যার মধ্যে পাঁচটি উপকূলীয় জেলা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর ও চাঁদপুর এবং উপকূলের কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী—এই দশটি জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেশি। এসব জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের ৭৯% এবং মোট মৃত্যুর ৮৭% ঘটেছে। শুধুমাত্র উপকূলের পাঁচ জেলায় আক্রান্ত ৪৫.৭৭% এবং মৃত্যু ৪১.৪৮%।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৪৬০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের (৪ হাজার ৩১১ জন) তুলনায় প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেশি।
এ বছর ডেঙ্গুতে মোট ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ জন ঢাকায় এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগে।
জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনেই ৪ হাজার ১৬৪ জন আক্রান্ত এবং ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০৫ জন, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার জানিয়েছেন, তাদের গবেষণার পূর্বাভাস মডেল অনুযায়ী, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, গাজীপুর, পিরোজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চাঁদপুর ও মাদারীপুরে ডেঙ্গু ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও, অনেকেই বাড়িতে বা অনিবন্ধিত ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন, ফলে প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেছেন, ডেঙ্গুর ধরন বদলেছে এবং এখন রোগীদের মধ্যে জটিল উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে। তিনি সবাইকে সচেতন থাকতে এবং জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ সময়মতো চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।