
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে রণক্ষেত্র প্রেসক্লাব: শিক্ষকদের কর্মবিরতির ঘোষণা।
স্টাফ রিপোর্টার:
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের কর্মসূচি আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনটি মূল দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলেও পুলিশের বাধায় পরে তারা শহীদ মিনারে স্থানান্তরিত হন এবং কাল থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি ও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর ব্যানারে রোববার (১২ অক্টোবর, ২০২৫) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচিতে সারাদেশ থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন।
তাদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া প্রদান, শিক্ষক ও কর্মচারী উভয়ের জন্য চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি করে দেড় হাজার টাকা করা, কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা।
সকাল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে যান চলাচল ব্যাহত হতে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেলা দেড়টার দিকে আন্দোলনকারীদের রাস্তা ছেড়ে দিতে আলটিমেটাম দেয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমের নেতৃত্বে একটি দল শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা শহীদ মিনারে চলে যান; পাঁচ মিনিট সময় দেওয়া হলো। পাঁচ মিনিট পরে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। আপনাদের নেতারা শহীদ মিনারে চলে গেছেন। সুতরাং আপনারা এখানে রাস্তা অবরোধ করবেন না।”
পুলিশের আলটিমেটামের পরও শিক্ষকরা রাস্তা না ছাড়লে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ তাদের সরাতে লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং জলকামান থেকে পানি ছোড়ে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশের লাঠিচার্জ ও জলকামান হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কয়েকজনকে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়, যদিও পরে কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ বারবার সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও শিক্ষক-কর্মচারীরা ঘুরেফিরে প্রেসক্লাবের সামনেই অবস্থান নেন।
বেলা তিনটা পর্যন্ত চলা প্রায় ছয় ঘণ্টার এই আন্দোলনে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এমনকি মেট্রোরেল স্টেশনও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার ফলে বিভিন্ন গন্তব্যের সাধারণ পথচারী ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
অবশেষে, বিকাল তিনটার পর আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা শহীদ মিনারের দিকে সরে যান এবং সেখানে তাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতিরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।