
চাঁদপুরে আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিসর্জন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদ দুর্গাপূজা বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে। পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়ে।
সকালে চাঁদপুরের বিভিন্ন মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় মহা দশমী বিহিত পূজা। এরপর হয় দর্পণ বিসর্জন। এই সময় মাকে বিদায় জানাতে মণ্ডপে মণ্ডপে নারীরা তেল ও সিঁদুরে দেবী মূর্তিকে রাঙিয়ে তোলেন। সনাতন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, এদিন দেবী দুর্গা মর্ত্যলোক ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যান। বিশ্বাস করা হয়, তিনি দোলায় চড়ে গমন করেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য হলো মানুষের মনের অসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়া। এই সকল অশুভ শক্তিকে বিসর্জন দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এই আয়োজনের উদ্দেশ্য।
দেবী দুর্গার বিদায়ের আগে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন নারীরা। দেবীর চরণের সিঁদুর নিয়ে তাঁরা নিজেদের রাঙিয়ে তোলেন। শাস্ত্র মতে, স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে দেওয়া সিঁদুর নিজের সিঁথিতে লাগিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। পান ও মিষ্টি সহযোগে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর একে অপরের কপালে ও সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন তাঁরা। সিঁদুর খেলা শেষে শেষবারের মতো দেবীর আরাধনা সম্পন্ন হয়।
এরপরই চাঁদপুর শহরে দেবী দুর্গার প্রতিমূর্তি নিয়ে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শহর প্রদক্ষিণ করে তরুণ-তরুণীরা ঢাক-ঢোল, ব্যান্ড পার্টির বাজনা ও সাউন্ড সিস্টেমের ধর্মীয় গানের তালে নেচে-গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। সন্ধ্যায় শহরের চৌধুরী ঘাট এলাকা দিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়েই শেষ হয় পাঁচ দিনের শারদ উৎসব।
বিসর্জন স্থলে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দীন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, নৌ এসপি মুশফিকুর রহমান ও অধিনায়ক ২১ বীর লেঃ কর্নেল মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন পিএসসি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা ও পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ।