হবিগঞ্জ (চুনারুঘাট) প্রতিনিধিঃ
চুনারুঘাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আব্দুল মন্নান চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি ‘অপহরণ’ নাটক সাজিয়েছিলেন বলে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তার মেয়ে শাহিনা আক্তার প্রতিপক্ষ জিতু গংদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেছিলেন এবং ঘটনার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সংবাদ সম্মেলনও করেন। তবে পুলিশের পেশাদারিত্ব ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এই সাজানো নাটকের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ জুন রাতে মন্নান চৌধুরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে শাহিনা আক্তার অভিযোগ করেন। ২৪ জুন চুনারুঘাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শাহিনা তার বাবাকে জীবিত উদ্ধারের দাবি জানান। তবে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র। মন্নান চৌধুরী অপহৃত হননি, বরং ১৭ জুন থেকে তিনি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাহ উপজেলার বক্তাবলি ইউপির রাজাপুর গ্রামের মাষ্টার বাড়ি জামে মসজিদে ৪০ দিনের জন্য তাবলিগ জামাতে আত্মগোপনে ছিলেন।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজিদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অনুসন্ধানে নেমে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে মন্নান চৌধুরীর অবস্থান নিশ্চিত করে। ২৭ জুন ফতুল্লাহ থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম জানান, তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে এটি একটি সাজানো নাটক। প্রাথমিকভাবে অভিযোগকারীর বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনার বাস্তবতার কোনো মিল পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, এখন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা এই ঘটনাকে নজিরবিহীন প্রতারণা হিসেবে উল্লেখ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী জিতু মিয়া চৌধুরী বলেন, ৬ মাস আগে তার বড়ভাই মফিল মিয়াকে হত্যা করা হয়, যার নেপথ্যে ছিলেন মন্নান চৌধুরী। এই মামলা থেকে রেহাই পেতেই মন্নানের মেয়ে মিথ্যা অপহরণ মামলা করেছেন। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদ মিয়া বলেন, এ ধরনের সাজানো নাটক প্রকৃত অপরাধ তদন্তে বাধা সৃষ্টি করে।
পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজিদুর রহমান জানান, আব্দুল মন্নান চৌধুরী স্বেচ্ছায় তাবলিগ জামাতে ছিলেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা দুঃখজনক। আজ তাকে আদালতে হাজির করা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।