নিজস্ব প্রতিবেদক:
নড়াইলের সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের পানতিতা খেয়াঘাট থেকে টেপারিপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ গত চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর মধ্যে মালিকানা নিয়ে মতবিরোধের কারণে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন সড়কটি বর্তমানে কাদা-পানিতে ভরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পথচারীদের জুতা হাতে নিয়ে অথবা মোটরসাইকেল ও সাইকেল ঠেলে নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কের দুই পাশে ইটের খোয়া স্তূপ করে রাখা আছে, যা বৃষ্টির পানিতে জমে থাকা ভাঙা রাস্তার কারণে তিনটি গ্রামের মানুষের জন্য চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই সড়কটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ২ কোটি ৯২ লাখ ৮৫ হাজার ৯২৭ টাকা বরাদ্দ দেয়। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ‘ফকির এন্টারপ্রাইজ’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। কিন্তু অর্ধেক কাজ হওয়ার পর পাউবো বাধা দিলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ফকির এন্টারপ্রাইজ’-এর স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম জানান, এলজিইডি থেকে অনুমোদন নিয়ে কাজ শুরু করার পর পাউবো জানায়, তাদের আওতাধীন এই সড়কে কাজ করতে হলে অনাপত্তি সনদ (এনওসি) নিতে হবে। এরপর এলজিইডি দ্রুত এনওসি চাইলেও ততদিনে পাউবোর আওতাধীন একই সড়কে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়ে যায়। ফলে পাউবো জানায়, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো সংস্থাকে কাজ করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নড়াইল সদর উপজেলার প্রকৌশলী খাইরুল ইসলাম জানান, পাউবোর এনওসি না নেওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, নড়াইল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, ওয়াপদার এই সড়কে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্প চলমান থাকায় সেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কাউকে কাজ করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
এতে পানতিতা গ্রামের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে সড়ক নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার দাবি জানিয়েছেন।