নড়িয়া (শরীয়তপুর) প্রতিনিধিঃ
“নড়িয়া বেরিবাধ বাঁচাও, অবৈধ বালুখোর হটাও” এই স্লোগানকে সামনে রেখে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলাকে পদ্মা নদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার দাবিতে আজ বুধবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পদ্মা নদী থেকে টেন্ডারের নামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার নড়িয়া উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণি পেশার কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ জিন্টু, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) এস এম ফয়সাল আহমেদ, বিএনপি নেত্রী শামীমা জামানসহ নড়িয়া উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতারা বর্তমানে প্রশাসন কর্তৃক নদী থেকে বালু বিক্রির টেন্ডারকে অবৈধ দাবি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ড্রেজার কাটার নদী থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। তারা বলেন, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বালু উত্তোলন ও পদ্মায় ড্রেজিং করা হলে বিগত সরকার আমলে ১৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নড়িয়ার পদ্মার ডানতীর রক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এর ফলে নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ভয়াবহ নদী ভাঙনের শিকার হবে। বিএনপির নেতাসহ স্থানীয়রা অবিলম্বে টেন্ডার বাতিল করে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয় নড়িয়ার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষার জন্য এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে বলে জানায়।
সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতারা বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার সাড়ে তিন হাজার বাড়ি এবং ২০১৮ সালে নড়িয়া উপজেলার সাড়ে পাঁচ হাজার বসতবাড়ি ও সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর ২০১৯ সালে ১৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মার ডানতীর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ২০২৩ সালে তা সম্পন্ন হয়।