
সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী শান্তি ও ঐক্যের আহ্বান।
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
আজ, ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী। মানবজাতির ত্রাণকর্তা, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার মধ্য দিয়ে সারাদেশে দিনটি পালিত হচ্ছে। দিনটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ইসলামের শান্তিময় বার্তা নিয়ে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্ম নেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার জীবন ও শিক্ষা বিশ্ব মানবতার জন্য শান্তির দিশা। তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুসলিম উম্মাহ এই দিনে বিশেষ প্রার্থনা, আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।
পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকার ও বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন, যেখানে তারা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে নবীর আদর্শ অনুসরণ করে শান্তি, ঐক্য ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন (আইএফ) দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- কুরআন তেলাওয়াত
- হামদ-নাত পরিবেশন
- কবিতা পাঠ
- সেমিনার ও আলোচনা সভা
- বিশেষ মোনাজাত
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্মের ওপর চার দিনের একটি সেমিনার চলছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন দেশজুড়ে এই সকল কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছে।
১৩ সেপ্টেম্বর থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব ও দক্ষিণ প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী ইসলামিক বইমেলা শুরু হবে। এতে দেশ-বিদেশের প্রায় ২০০টি স্টল থাকবে। মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান এবং লেবাননের প্রকাশকরাও এই মেলায় অংশ নিচ্ছেন। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
এছাড়াও, স্কুল, কলেজ, আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসা এবং সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামিক ফাউন্ডেশন আগারগাঁও কার্যালয়ে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশুসদন, বৃদ্ধাশ্রম এবং এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা এবং রাজশাহীর মতো প্রধান শহরগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রধান মসজিদ ও ধর্মীয় স্থানগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনগুলোতেও দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। এটি বিশ্বজুড়ে মহানবী (সা.)-এর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি অংশ।