
হাইমচরে পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে গ্রাহকের ক্ষোভ, এজিএমের অপসারণের দাবি।
হাইমচর (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ
ঘন ঘন লোডশেডিং, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল এবং কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে চাঁদপুরের হাইমচরে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ হাইমচরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এই ক্ষোভ আরও প্রকাশ্যে আসে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। এতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই চরম ভোগান্তিতে পড়েন। গত ৩ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে
গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে মিটারের রিডিংয়ের চেয়ে বেশি ইউনিট দেখিয়ে অতিরিক্ত বিল আদায় করছে। দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের গ্রাহক আব্দুল কাদির জানান, তিনি গত ৬-৭ মাস ধরে মিটারের ছবি নিয়ে সরাসরি অফিসে গিয়ে বিল সংশোধন করাচ্ছেন। প্রতি মাসে প্রায় ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা অতিরিক্ত বিল কমানো সম্ভব হলেও এই প্রক্রিয়ায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, “যদি প্রতি মাসে গ্রাহককে বিল ঠিক করতে অফিসে যেতে হয়, তাহলে অফিসের কর্মীরা কী করেন?”
গ্রাহকদের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বর্তমান এজিএম তৌহিদুর রহমান। উত্তর আলগী ইউনিয়নের গ্রাহক রিয়াদ সিকদারের অভিযোগ, তিনি বিদ্যুৎ না থাকার কারণ জানতে চাইলে এজিএম তাকে দুর্ব্যবহার করে বলেন, “আমাদের এখানে কারেন্ট নেই কারণ ফরিদগঞ্জেও কারেন্ট নেই।” এছাড়াও অনেকের অভিযোগ, এজিএম তৌহিদুর রহমান গ্রাহকদের সঙ্গে প্রায়শই খারাপ ব্যবহার করেন।
এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকরা এজিএম তৌহিদুর রহমানকে প্রত্যাহার করে পূর্বের এজিএম হাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, পূর্বের এজিএমের হাসি মাখা ব্যবহার বিদ্যুৎ ভোগান্তিও ভুলিয়ে দিতো।
স্থানীয় রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরাও এই ভোগান্তির প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। হাইমচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শফিক পাটওয়ারী তার ফেসবুকে লিখেছেন, “সকাল থেকে বিদ্যুৎহীন হাইমচর, অতিষ্ঠ জনগণ। জনবিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা।”
কম্পিউটার সরঞ্জাম ব্যবসায়ী শাকিল এবং জুবায়ের জানান, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে
স্থানীয়রা বলছেন, একজন জীবিত মানুষের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়াও এই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ। তাদের দাবি, কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ না নিলে জনরোষ আরও বাড়বে।