
নয়া দিগন্তে 'নতুন কুড়ি', শৈশবের স্বপ্নের মঞ্চে ফিরছে প্রাণের স্পন্দন
স্টাফ রিপোর্টারঃ
দীর্ঘ দুই দশকের নীরবতা ভেঙে অবশেষে আবারও ফিরে এলো দেশের জনপ্রিয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুড়ি’। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম গত ১৭ আগস্ট বিটিভিতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এই প্রত্যাবর্তন কেবল একটি অনুষ্ঠানের পুনরাগমন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
‘নতুন কুড়ি’ শুধু একটি টেলিভিশন শো ছিল না, এটি ছিল লক্ষ লক্ষ শিশুর স্বপ্নের মঞ্চ। ১৯৭৬ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা মনোয়ারের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। এর মাধ্যমে নুসরাত ইমরোজ তিশা, রুমানা রশিদ ঈশিতা, কনক চাঁপাসহ অসংখ্য তারকা শিল্পী উঠে এসেছেন, যারা আজ দেশের সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরছেন। ২০০৬ সালে হঠাৎ অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তরুণ প্রতিভাদের বিকাশে এক বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছিল।
এবার আধুনিক বিন্যাসে নতুন রূপে ফিরে এসেছে ‘নতুন কুড়ি’। এবার পুরো দেশকে ১৯টি অঞ্চলে ভাগ করে আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে, যার চূড়ান্ত পর্ব হবে ঢাকায়। ৬-১১ বছর এবং ১১-১৫ বছর—এই দুটি বয়সভিত্তিক গ্রুপে প্রতিযোগীরা মোট ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে অংশ নিতে পারবে। এই বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত, লোকগান, হামদ-নাত, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্প বলা, কৌতুক, এবং নৃত্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মো. মাহফুজ আলম বলেন, “এই ধরনের অনুষ্ঠান রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।”
‘নতুন কুড়ি’র এই ফেরা শুধু বিনোদন নয়, এটি তরুণদের মধ্যে শৃঙ্খলা, আত্মবিশ্বাস, এবং দেশের সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তুলবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই খবর ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তাদের শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
‘নতুন কুড়ি’র পুনরুজ্জীবন ডিজিটাল যুগে আটকে থাকা শিশুদের জন্য একটি সুস্থ ও সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মঞ্চ আবারও নতুন প্রজন্মের প্রতিভা তুলে আনবে এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে।