হাইমচর (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীর তীরে নোঙ্গর করা একটি বিশেষায়িত জাহাজ যেন সাক্ষাৎ স্বর্গদূত। এই ভাসমান হাসপাতালটি দুর্গম চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা। সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের নামে স্থাপিত এই হাসপাতালটি পরিচালনা করছে ফ্রেন্ডশিপ নামক একটি বেসরকারি সংস্থা, যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তামান্না আক্তার জানান, “আমাদের চরের ৮০% মানুষই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না। এই ভাসমান হাসপাতালটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এখানে ছোটখাটো অনেক রোগের চিকিৎসা হচ্ছে। যদি এটি স্থায়ীভাবে এখানে থাকে, তবে আমাদের মতো দরিদ্র মানুষের অনেক উপকার হবে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে সাতজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং ৩২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানে নিয়োজিত রয়েছেন। আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত এই হাসপাতালে সব ধরনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। আগামী ৯ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হবে। তবে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই এখানে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
কেএএপিএমএইচবি-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. রাতুল ঘোষ জানান, “আমরা এখানে সাধারণ মানুষের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছি।”
কেএএপিএমএইচবি-এর শীপ এডমিন রেজাউল করিম জানান, “আমরা ৭ জানুয়ারি জাহাজটি এখানে নিয়ে আসি এবং ৮ জানুয়ারি থেকে আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ভোলায় আমাদের মোট পাঁচটি ভাসমান হাসপাতাল রয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, এই ভাসমান হাসপাতালটি শুধু চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে না, বরং চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের মনে আশার আলো জাগাচ্ছে। আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা হাতের নাগালে পেয়ে তারা এখন সুস্থ জীবনের স্বপ্ন দেখছেন।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. নূরে আলম জানান, “পাঁচ বছর পর এই হাসপাতালটি সরকারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত হবে। সরকার নিজস্ব জনবল ও সম্পদ দিয়ে এই সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।”