ডেস্ক রিপোর্টঃ
বেনাপোল স্থলবন্দরে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক মানের ভেহিকেল কার্গো টার্মিনালটি উদ্বোধন করেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় টার্মিনালটি উদ্বোধন করা হয়। ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে টার্মিাালের উদ্বোধন করা হয়।পরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।
এছাড়াও বেনাপোলে যাত্রীসেবায় আধুনিক মানের প্যাসেজ্ঞার টার্সিনাল নির্মান করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকদের সাথে বিফিংয়ে একথা বলেন উপদেষ্টা।
২০২১ সালে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ঘেঁষে বেনাপোল বন্দরের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু করে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। বেনাপোল বন্দরে ভেহিকেল টার্মিনাল প্রকল্পে কাজ করেছেন চারটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে রয়েছে টিবিইএএল, এনডিইএলআরএসএসআইজেভি,ব্যারাক বিল্ডিং, ওপেন ইয়ার্ড ও অপারেশন বিল্ডিং। এই কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি ৪১ একর জমির ওপরে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১০৯ কোটি এবং নির্মাণকাজ বাবদ ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। নবনির্মিত এ টার্মিনালে প্রায় দেড় হাজার ট্রাক রাখার মতো ধারণক্ষমতা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় পার্কিং ইয়ার্ড,কার্গো ভবন, বন্দরসেবা ভবন, ইউটিলিটি ভবন, ফায়ার স্টেশন, আধুনিক টয়লেট কমপ্লেক্স, ওয়েব্রিজ স্কেল, চিকিৎসা, রান্না ও বিশ্রামের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,নো-পরিবহন উপদেষ্টার একান্ত সচিব জাহিদুল ইসলাম,নৌ পরিবহন মন্ত্রনালযের অতিরিক্ত সচি্ব দেলোয়ারা বেগম বিজিবি’র।
যশোর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেঃ জেনাঃ হুমায়ূন কবির, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, যশোর জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম, যশোর জেলা পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, বেনাপোল কাস্টমস হাউস কমিশনার কামরুজ্জামান, প্রকল্প পরিচালক জনাব হাসান আলী এবংশার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বেনাপোল পৌর প্রশাসক, ড. রাজীব হাসান, শার্শা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নুসরাত ফারিয়া,বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন তরফদার,বেনাপোল সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার৷ ও সিএন্ডএফ নেতা মফিজুর রহমান সজন জানান বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানিতে দুর্ভোগ কমবে। উপকৃত হবে ব্যাবসায়িরা। কমবে যানজট মাইল ফলক হযে থাকবে টার্মিনালটি.। টার্মিনাল উদ্বোধনে বানিজ্যে বাড়বে গতি কমবে ডেমারেজ।
টার্মিনাল উদ্বোধন শেষে বন্দরের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব:) ড. এম শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভারতীয় আমদানিকৃত পন্য বোঝায় ট্রাকগুলি এ কার্গো ইয়ার্ডে রাখা হবে। সাথে সাথে ভারতে রপ্তানি মুখী বাংলাদেশী পণ্য বোঝায় ট্র্যাকগুলোই এ ইয়ার্ডে অবস্থান করবে। তবে ভারতীয় পণ্য বোঝায় আমদানিকৃত ট্রাকের চেয়ে ভারতে রপ্তানি বোঝায় বাংলাদেশী ট্রাকগুলি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এখানে অবস্থান করতে পারবে।
পরে তিনি বন্দর অডিটরিয়ামে স্থলবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও বন্দর ব্যবহারকারীদের সাথে মত বিনিময় সভায় মিলিত হন।
বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব শামসুর রহমান জানান , বেনাপোল দেশের সর্ববৃত্তম স্থল বন্দর। এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ গাড়ি আমদানি পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। এবং বাংলাদেশী রপ্তানি পন্য নিয়ে দেড়শ থেকে ২০০ গাড়ি প্রতিদিন ভারতের প্রবেশ করে। পণ্য বোঝায় গাড়িগুলো বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের পর রাখার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকাই প্রতিনিয়ত বেনাপোল বন্দরে যানজটের কবলে পড়তো। আজ বৃহস্পতিবার কার্গো ইয়ার্ড চালু হওয়ার ফলে একসঙ্গে এই টার্মিনালে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ পণ্যবাহী ট্রাক রাখা যাবে।এরফলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে আসবে,সীমান্ত বাণিজ্য ও রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মনে করি।
তিনশ’ ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই টার্মিনালের নির্মান কাজ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয।