
ডেক্স রিপোর্টঃ
আজ রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭,৭১২ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে আসবে ৫,০১৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ হিসেবে ২,৪২৮ কোটি টাকা এবং বাকি ২৫৬.৮৯ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন।
প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মোট ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৫টি নতুন, ৩টি সংশোধিত এবং ৩টি প্রকল্প ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক পরিবহন ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন।
আজকের একনেক সভায় কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহায়ন, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ এবং স্থানীয় সরকার খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো স্থান পায়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্প হলো:
কৃষি: ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প।
বিদ্যুৎ: ‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকায় ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্র আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্প।
শিক্ষা: ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন’ প্রকল্প।
স্বাস্থ্য: সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন’ প্রকল্প।
গৃহায়ন: ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির অভ্যন্তরে কর্মচারীদের জন্য ‘বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি)’ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প।
পানি সরবরাহ: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত)’ এবং ‘বান্দরবান পৌরসভা ও জেলার তিন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প।
যোগাযোগ ও ক্রীড়া: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন’ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প।
প্রকল্প অনুমোদনের পাশাপাশি আজকের সভায় পূর্বানুমোদিত ৯টি প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কেও অবহিত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
বিদ্যুৎ: হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপের শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন।
অবকাঠামো: বরগুনার দুটি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন, তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন, সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়।
অন্যান্য: লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন, তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা প্রকল্প।