
চাঁদপুরে ইয়াবা সম্রাজ্ঞী মরিয়ম মিশরী গ্রেপ্তার
স্টাফ রিপোর্টার:
গভীর রাতে এক চাঞ্চল্যকর অভিযানে ইয়াবা সম্রাজ্ঞী হিসেবে পরিচিত মরিয়ম মিশরীকে গ্রেপ্তার করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ও সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারের ফলে চাঁদপুরের মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এক বড় সাফল্য এলো বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার দিবাগত রাত প্রায় দেড়টা। যখন পুরো শহর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক তখনই চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম শহরে চালায় এক রুদ্ধশ্বাস অভিযান। এসআই আবুল কালাম গাজীর নেতৃত্বে পুলিশের দলটি ডিউটিতে ছিল। গোপন সূত্রে খবর আসে, কর্ণার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ভবনের সপ্তম তলায় চলছে ইয়াবা লেনদেন। দ্রুত অফিসার ইনচার্জকে জানিয়ে রাত ১টা ৩৫ মিনিটে পুলিশ টিমটি ওই ভবনে পৌঁছে যায়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়েই এক নারী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু মুহূর্তেই ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে। পরে জানা যায়, সে-ই আলোচিত ইয়াবা সম্রাজ্ঞী মরিয়ম মিশরী, যার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিক মাদক মামলা ছিল।
সাক্ষীদের উপস্থিতিতে নারী কনস্টেবল মাহিনুর আক্তার তুহিন মিশরীকে তল্লাশি করেন। তার দেহে কিছু না পাওয়া গেলেও, ঘরের বিছানার নিচে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিশরী জানায়, সে টেকনাফ থেকে কম দামে ইয়াবা কিনে চাঁদপুরে বেশি দামে পাইকারি বিক্রি করত। মাদক ব্যবসাই ছিল তার প্রধান আয়ের উৎস।
পুলিশ জানায়, এটি মিশরী বেগমের প্রথম অপরাধ নয়। এর আগেও চট্টগ্রামে ২০ হাজার ইয়াবাসহ তার তিন সহযোগী ধরা পড়েছিল। জেল থেকে বেরিয়েও সে ফের মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, একসময় চাঁদপুরে মিশরী ছিল মিষ্টভাষী ও সুন্দরী হওয়ায় পরিচিত মুখ। কিন্তু সেই মুখের আড়ালেই সে দীর্ঘদিন ধরে এক অন্ধকার মাদক সাম্রাজ্য পরিচালনা করছিল।
এই ঘটনায় মরিয়ম মিশরীর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) ধারার ১০(ক) উপধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চাঁদপুরের সাধারণ মানুষ এই গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, এই অভিযান শহরের তরুণ প্রজন্মকে ইয়াবার ভয়াল ছোবল থেকে রক্ষা করতে বড় ভূমিকা রাখবে। রাতের সেই নীরব অভিযানে যেন স্পষ্ট বার্তা—যতই শক্তিশালী হোক মাদকচক্র, আইনের হাত তার চেয়েও অনেক বেশি শক্ত।