
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এবং চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক
হাইমচর (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এবং চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ছয়টি দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং দলীয়ভাবে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন।
বুধবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পরিদর্শন কালে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে সহাবস্থান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরেন।
বিএনপি নেতা শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক উপজেলার তেলির মোড় শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির শ্রী শ্রী দূর্গা দেবীর মণ্ডপ, চরভাঙ্গা হাই স্কুল মাঠ শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মণ্ডপ, কমলাপুর শ্রী শ্রী দূর্গা দেবীর মণ্ডপ, উত্তর চরভৈরবী শ্রী শ্রী পূর্ণব্রক্ষহরি চাঁদ আশ্রম, দক্ষিণ চরভৈরবী শ্রী শ্রী গৌর নিতাই আশ্রম এবং দক্ষিণ পাড়া বগুলা শ্রী শ্রী দুর্গা দেবীর মণ্ডপ—এই ছয়টি মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও পূজা কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের পূজার সার্বিক খোঁজখবর নেন।
পূজা মণ্ডপে দেওয়া বক্তব্যে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, “আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ পালন করার জন্য আমরা আপনাদের কাছে এসেছি, আপনারা সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন করতে পারছেন কিনা তা দেখতে। গত পরশুদিন থেকে আপনাদের যে পূজা শুরু হয়েছে, আজকে নবমী, আশা করি সুন্দরভাবে আপনারা পূজায় প্রার্থনা করতে পারছেন।” তিনি আরও বলেন, প্রশাসন ও দলীয়ভাবে সকলের সহযোগিতা লাগছে, এবং আশা করেন সবাই সেই সহযোগিতা পাচ্ছেন।

তিনি ১৫ বছর আগের পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “আমরা যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাথে জড়িত, গত ১৫ বছর, ৫ ই আগস্ট এর আগে আমরা কিন্তু এভাবে চলাফেরা করতে পারতাম না। যার জন্য আমরা আপনাদের সমস্যাটুকু দেখতে পারি নাই।”
পূজা মণ্ডপে আগতদের কাছ থেকে তাদের চাহিদা শুনে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গত বছরেও আমরা বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে গিয়েছি এবং আপনাদের যে চাহিদা—এত অল্প চাহিদা আমার ধারণার বাহিরে। গত ১৫ বছরে কেন আপনাদের এই অল্প চাহিদাগুলো পূরণ হলো না? সব মিলিয়ে একটি মন্দির করতে ২০ লাখ টাকা বেশি খরচ হওয়ার কথা না। এটাই একেবারেই নগণ্য টাকা।”
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “যে পরিমাণে টাকা লুটপাট হয়েছে তার কাছে এটা কিছুই না। আপনারা আমাদের থানা ও ইউনিয়ন বিএনপিকে আপনাদের সমস্যাটুকু জানাবেন, তাহলে আমরা আপনাদের সমস্যার সমাধানে কাজ করতে পারব।” পূজা মণ্ডপের অসমাপ্ত ছোট কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে প্রশাসনিক ও দলীয়ভাবে আলোচনা করারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বিএনপি নেতা তার বক্তৃতায় ছাত্রজীবনের স্লোগান মনে করিয়ে দেন, “আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন একটি স্লোগান ছিল হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই। গত ১৫ বছর আমরা এই স্লোগানটি দিতে পারিনি। আপনাদের কাছে শুধু একটি প্রার্থনা করতে চাই—আমরা সেই আগের জায়গায় আসতে চাই। হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, আমরা সবাই বাঙালি, এই পরিচয়টাই আমাদের হোক, এটি আমাদের প্রার্থনা।”
তিনি মণ্ডপে উপস্থিত সকলের কাছে অনুরোধ করে বলেন, “প্রার্থনা করবেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হতে পারেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে এই দেশ পরিচালনার জন্য সুযোগ করে দেয় এই প্রার্থনা করবেন। এবং আমরা যেন সবাই সহ অবস্থানে থাকতে পারি।” শেষে তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সবাইকে শারদীয় দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা জানান।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সলিম, সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান গাজী এবং হাইমচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শফিক পাটওয়ারী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক খান, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম কোতোয়াল সহ জেলা ও উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।